পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম দিন পর্যটক শূন্য থাকলেও দ্বিতীয় দিনে হাজারো পর্যটকে মুখরিত হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার। রোববার (২৩ এপ্রিল) সকালের রোদ উপেক্ষা করে সমুদ্রস্নান এবং সৈকতে আনন্দ-উল্লাসে মেতেছেন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পর্যটকরা। এতে খুশি পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
আজ সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা, সিগাল এবং লাবণী পয়েন্ট আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০ হাজার পর্যটকের পদচারণায় মুখর। প্রিয়জনদের সঙ্গে সৈকত উপভোগে ব্যস্ত অনেকে। কেউ টায়ার নিয়ে ঢেউয়ের সঙ্গে সমুদ্রের জলে গা ভাসাচ্ছেন, কেউ ওয়াটার বাইক (জেটস্কি) নিয়ে পানিতে ছুটে বেড়াচ্ছেন, বালিতে ঘোড়া দৌঁড় ও বিচ বাইক চালিয়ে আড্ডায় মেতেছেন অনেকেই।
সিরাজগঞ্জের কাজীপুর থেকে সপরিবারে বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী সাইমুন তাহের বলেন, ‘করোনার পর এই প্রথম কক্সবাজারে পা রাখলাম। ঈদের আগে রুম বুকিং দেওয়া ছিল। বুধবারে চলে যাবো। এ সময়ের মধ্যে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ মেরিনড্রাইভ ভ্রমণের ইচ্ছে আছে। পরিবার নিয়ে ঈদের ছুটিতে আনন্দে কাটাতে চাই।’
মৌলভীবাজার কুলাউড়া থেকে এসেছেন একঝাঁক শিক্ষার্থী। তাদের একজন আলিফ রায়হান বলেন, ‘অনেকদিন থেকে প্লান করে আসছি এবারের ঈদটা বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজারে কাটাবো। অনেক মজা করবো। অবশেষে আমরা বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে চলে এলাম। এখানে এসে বন্ধুরা মিলে ফুটবল খেলেছি, বাইক চালিয়েছি। এখন সমুদ্রস্নান করবো। প্রচুর মজা হচ্ছে।’
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, কক্সবাজারের ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেলের ৬০ থেকে ৭৫ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। ভাড়ায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। হোটেলগুলোয় দৈনিক ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৬০ হাজার। পর্যটক আসতে শুরু করেছে। সন্ধ্যায় আরো বাড়বে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আজ কালের মধ্যে পর্যটকে ডুবে যাবে কক্সবাজার। এবার ঈদের ছুটিসহ টানা ১০ দিনে ৮ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম আশা করা হচ্ছে।
কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, শহরে ৭ শতাধিক রেস্তোরাঁ রয়েছে। সমিতির আওতাভুক্ত রেস্তোরাঁ গুলোতে মূল্য তালিকা রয়েছে। তালিকার চেয়ে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করা হলে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের একাধিক তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্রে রয়েছে। সেখানে নালিশ করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. আবু সুফিয়ান বলেন, জেলা প্রশাসনের একাধিক টিম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। অতিরিক্ত ভাড়া, পর্যটক হয়রানি রোধ করতে তারা মাঠে রয়েছেন। পর্যটকদের নিরাপদে কক্সবাজার ভ্রমণে সর্বোচ্চ সজাগ রয়েছে প্রশাসন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। জেলার প্রতিটি পর্যটন স্পটে তাদের নজরদারি রয়েছে। এছাড়া সমুদ্র সৈকতে রাতদিন ২৪ ঘণ্টা পর্যটকদের নিরাপত্তা দিচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।